জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করতে পারবেন। পাসপোর্ট সংশোধনের নিয়ম, কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন এবং কীভাবে পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে তা জানুন।
এই ব্লগে পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য কী কী প্রয়োজন, কীভাবে আবেদন করতে হবে এবং পাসপোর্ট সংশোধনের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
গত 13 ডিসেম্বর, 2022, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগ পাসপোর্ট সংশোধন সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এই বিজ্ঞপ্তিতে দেশে এবং বিদেশে পাসপোর্ট সংশোধনের সম্পূর্ণ নিয়মাবলী স্পষ্ট করা হয়েছে।
আপনারা যারা পাসপোর্ট সংশোধন এবং পাসপোর্ট নবায়ন করতে যাচ্ছেন তাদের এই বিজ্ঞপ্তি এবং পাসপোর্ট সংশোধনের সর্বশেষ নিয়ম সম্পর্কে জানা থাকা উচিত।

আসুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক সর্বশেষ পাসপোর্ট রিভিশন নোটিশে কী বলা হয়েছে।
পাসপোর্ট সংশোধন সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন – ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ (কার্যকর)
১) ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্যের ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া তথ্য (নাম, পিতামাতার নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুসারে পাসপোর্ট পুনরায় রিইস্যু করতে হবে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হবে। জেএসসি/জেডিসি/এসএসসি/দাখিল/কারিগরি/উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমমানের সার্টিফিকেট বিশেষ প্রয়োজনের জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে একটি লিখিত আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে, আবেদনকারীকে অধিদপ্তর/সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত নমুনা অনুসারে যথাযথভাবে পূরণ এবং স্বাক্ষরিত একটি অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হবে।
২) সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে 28/04/2021, 9/12/2021 এবং 03/11/2022 তারিখে জারি করা এই সংক্রান্ত সার্কুলার বাতিল করা হয়েছে।
৩) যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
 |
সংশোধন সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন (প্রকাশ-১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিঃ) |
পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম
পাসপোর্ট এমআরপি বা ই পাসপোর্টের ধরন নির্বিশেষে, পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন অনলাইনে করা উচিত। ই-পাসপোর্টের আবেদনে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সব তথ্য দিতে হবে। যেহেতু এটি একটি সংশোধন বা পুনর্নবীকরণ আবেদন, তাই আইডি ডকুমেন্টস অপশন থেকে পুরানো পাসপোর্ট তথ্য সহ আবেদনটি জমা বা Submit করুন।
পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হবে:
- ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী সঠিক তথ্য প্রদান করুন। এছাড়া বিদেশে দূতাবাসে আবেদন করলে শিক্ষাগত যোগ্যতা সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন, স্থায়ী আবাসিক কার্ড/ স্টুডেন্ট আইডি কার্ড/ জব আইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি সংগ্রহ করুন।
- অনলাইনে আবেদন করুন।
- এই চালানের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি (passport fee) প্রদান করুন।
- পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য লিখিতভাবে আবেদন করুন।
- অঙ্গীকার নামা তৈরি করুন - পাসপোর্ট সংশোধনী অঙ্গীকারনামা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং স্বাক্ষর করতে হবে এবং আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে। ডাউনলোড করুন- পাসপোর্ট সংশোধনী অঙ্গীকারনামা।
- সমস্ত কাগজপত্র সহ আবেদনপত্র জমা দিন।
পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে
পাসপোর্ট সংশোধন করতে প্রধানত প্রয়োজন হবে:
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন।
- Permanent Resident Card/ স্টুডেন্ট আইডি কার্ড/ জব আইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স যদি বিদেশে দূতাবাসে আবেদন করা হয়
- অতিরিক্ত ডকুমেন্ট হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট এবং জন্ম নিবন্ধন
- লিখিত আবেদন
- অঙ্গীকারনামা
- পুরাতন পাসপোর্টের কপি এবং পাসপোর্ট।
পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানা সংশোধনের ক্ষেত্রে, আপনার দেওয়া তথ্য স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলি দ্বারা যাচাই করা যেতে পারে।
পাসপোর্টে জন্ম তারিখ সংশোধন
পাসপোর্টে জন্ম তারিখ NID Card অনুযায়ী সংশোধন করতে হবে। সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক। অতিরিক্ত ডকুমেন্ট হিসেবে জেএসসি/ জেডিসি/ এসএসসি/ এইচএসসি/ দাখিল/কারিগরি/ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমমানের পরীক্ষার সার্টিফিকেট প্রয়োজন হতে পারে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তে জন্ম নিবন্ধন সনদ বিবেচনা করা হবে।
পাসপোর্টে নাম সংশোধন - Passport Name Correction
পাসপোর্টে নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন দেওয়া যাবে। আপনি পাসপোর্টে আপনার নাম এবং পিতামাতার নাম সংশোধন করতে পারেন।
পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
পাসপোর্ট সংশোধন করতে 4,025 টাকা থেকে সর্বোচ্চ 10,350 টাকা (ভ্যাট সহ) পর্যন্ত একটি নতুন পাসপোর্ট ফি অনুযায়ী দিতে হবে। সংশোধনের জন্য আলাদা এবং অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য নয়। পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য শুধুমাত্র পাসপোর্ট ফি A চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করে দিতে হবে।FAQs
পাসপোর্টের জন্ম তারিখ সংশোধন করা যাবে কি?
হ্যাঁ, ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ অনুযায়ী পাসপোর্টে জন্ম তারিখ সংশোধন করা যাবে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সেই অনুযায়ী করা যাবে।
ই পাসপোর্ট কি সংশোধন করা যায়?
হ্যাঁ, NID CARD অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করা যেতে পারে।
কিভাবে পাসপোর্ট সংশোধন করব?
আপনার পাসপোর্ট সংশোধন করতে, আপনাকে প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সঠিক কিনা। তারপর জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী অনলাইনে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করুন। ফি প্রদানের পর আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি, তথ্য সংশোধনের হলফনামা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুন
- জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করার নিয়ম
- টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে